ঢাকা , শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ , ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
১৪ অঞ্চলে বজ্রঝড়ের শঙ্কা ভারী বৃষ্টির আভাস লালমনিরহাট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শতাধিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিলো দক্ষিণ সিটি খুলবে বাণিজ্যের নতুন দুয়ার আমতলীতে অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন আমতলীতে সদ্য যোগদানকৃত ইউএনও'র মতবিনিময় সভা আমতলীতে সামুদ্রিক মাছ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ ভূমিকম্পে দ্রুত উদ্ধার-সহায়তায় স্পেশাল ফোর্স গড়েছে ফায়ার সার্ভিস : ডিজি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ আটক ৩ থানায় মামলা ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ করিডর নিয়ে সরকারের অবস্থানের মধ্যে ধোঁয়াশা আছে-আনু মুহাম্মদ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ টেলিফোন খরচ সোয়া কোটি উদ্বোধনী ব্যয় ৪৩ লাখ টাকা চট্টগ্রাম বন্দরে যুক্ত হলো সেভেন সিস্টার্সও লাভবান হবে শাহবাগ অবরোধ নার্সিং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে ৮ বাস ভরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসে যোগ দিলেন অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ আহত ৫০ প্রশিক্ষণের অভাবে থমকে আছে ব্লক ইটের ব্যবহার গাইবান্ধায় জেগে ওঠা চরের জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, বৃদ্ধ নিহত

লালমনিরহাট

  • আপলোড সময় : ১৬-০৫-২০২৫ ১২:০৩:৩১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৬-০৫-২০২৫ ১২:০৩:৩১ পূর্বাহ্ন
লালমনিরহাট
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলায় বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সড়কের পাশের বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। গত বুধবার রাত ১২টার পর শুরু হওয়া এ ঝড় ও শিলাবৃষ্টি মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট স্থায়ী হলেও তাণ্ডবের পরিমাণ ছিল ভয়াবহ। দুই উপজেলার অন্তত অর্ধসহস্রাধিক কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের সঙ্গে প্রবল শিলাবৃষ্টি হওয়ায় উঠতি বোরো ধান, ভুট্টা, পাট, আম, লিচু, কলাবাগান এবং সবজির ক্ষেত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। গাছ উপড়ে পড়ে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বন্ধ ছিল লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক ও রেলরুট। আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের আয়নারপুল বটতলা এলাকায় বিশাল একটি বটগাছ উপড়ে পড়ে দুটি বাড়ির ওপর। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন, যাদের মধ্যে একজন গুরুতর। আহত সেফালী বেগমকে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে, অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আবু তালেব বলেন, সড়কের পাশে ঝুঁকিপূর্ণ বটগাছটি অপসারণের জন্য বহুবার জেলা পরিষদকে জানানো হয়ছিল। কোনো কর্ণপাত না করায় গত বুধবার রাতের ঝড়ে গাছটি উপড়ে পড়ে আমার দুটি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে হয়ে গেছে। আমার স্ত্রীর মাথা ফেটে গেছে। প্রশাসন এর দায় এড়াতে পারে না। কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। কাকিনা হাট ও বাজার এলাকার বহু দোকানঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে ব্যবসায়ীদের পণ্য। অনেক বাড়ির মাটির দেয়াল ধসে পড়েছে, বহু পরিবার হয়ে পড়েছে আশ্রয়হীন। স্থানীয় কৃষক আব্দুল করিম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ধারদেনা করে এবার ধান আবাদ করেছিলাম। ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেল। এখন কী করব, বুঝতে পারছি না। ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছের কারণে জেলার গুরুত্বপূর্ণ লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে এবং বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় গাছ অপসারণ করে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। রেললাইনের ওপর গাছ পড়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলপথে ৩ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে রেলওয়ে বিভাগের একটি দল গাছ অপসারণ করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে। নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন এলাকায় ঝড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হাজারো মানুষ খাবার পানি, মোবাইলফোন চার্জ ও রাতের আলো নিয়েও বিপাকে পড়েন। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত লাইনের কাজ চললেও স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় শুকনো খাবার বিতরণ শুরু করেছে। জনপ্রতিনিধি ও ত্রাণ কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বা প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের দ্রুত পুনর্বাসন ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলেও ঝড়ের রেখে যাওয়া ক্ষত কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের তাৎক্ষণিকভাবে সাড়ে ৭ হাজার টাকা ও কিছু চাল দেওয়া হয়েছে। তালিকা পেলেই দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণের অনুরোধ উপেক্ষা করার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে। কোনো কর্মকর্তার গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য